Saturday, December 14, 2024


ও বিয়ে করুক, না হয় মেরে ফেলুক। ওসি সেলিম রেজা’র বাড়িতে এক নারী উদ্যোক্তার অনশন

লাভলুর রহমান, বিশেষ প্রতিনিধিঃসদ্য বরখাস্ত নাচোল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সেলিম রেজা চৌধুরীর সিরাজগঞ্জের তাড়াশের বাড়িতে বিয়ের দাবিতে অনশন করছেন…

By স্টাফ রিপোর্টার , in Uncategorized , at June 22, 2023

লাভলুর রহমান, বিশেষ প্রতিনিধিঃ
সদ্য বরখাস্ত নাচোল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সেলিম রেজা চৌধুরীর সিরাজগঞ্জের তাড়াশের বাড়িতে বিয়ের দাবিতে অনশন করছেন এক নারী উদ্যোক্তা। বুধবার (২১ জুন) সকাল ১০টা থেকে উপজেলার নওগাঁ ইউনিয়নের বানিয়াবহু গ্রামে সেলিম রেজার বাড়িতে তিনি অবস্থান করছেন। সেলিম রেজা চৌধুরী ওই গ্রামের মৃত মান্নান চৌধুরীর ছেলে।
ভুক্তভোগী ওই নারী জানান, ২০২০ সালের শেষ দিকে সেলিম রেজা নাচোল থানার ওসি থাকাকালে আমার সঙ্গে পরিচয় হয়। পরে মামলা সংক্রান্ত কাজে যাওয়া-আসা সূত্রে আন্তরিক সম্পর্ক গড়ে ওঠে। যা পরে প্রেমের সম্পর্কে গড়ায়। পরে বিয়ের আশ্বাস দেখিয়ে শহরের নাখেরাজপাড়ায় ওসির ভাড়া বাসায় নিয়ে একাধিকবার ধর্ষণ করেন। বিভিন্ন সময়ে হোটেলে নিয়েও ধর্ষণ করেছে ওসি।
পরে জেলা পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে বিশেষ শাখায় ও ভোলাহাট থানায় কর্মরত থাকাকালেও আমাদের সম্পর্ক ছিল। এক পর্যায়ে ওসির স্ত্রী আমাদের সম্পর্কের কথা জেনে ফেললে আমার সঙ্গে যোগাযোগ বন্ধ করে দেন। প্রথমদিকে ওসির সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপনের সময় জানায়, তার স্ত্রীকে তিনি ডিভোর্স দিয়েছেন এবং আমাকে বিয়ে করতে চান। আমি তার প্রতি সরল বিশ্বাস রেখে এতদূর পর্যন্ত সম্পর্ক নিয়ে গেছি।
পরে জানতে পারি- স্ত্রীকে তিনি ডিভোর্স দেননি। তিনি যোগাযোগ বন্ধ করতে চাইলেও আমি তাকে পেতে যোগাযোগের চেষ্টা অব্যাহত রাখি। এরই ধারাবাহিকতায় চলতি বছরের ৬ ফেব্রুয়ারি তাকে বিয়ের দাবিতে ভোলাহাট থানায় যাই। এ সময় আমাকে বেধড়ক মারধর করেন। পুলিশের অন্য সদস্যরাও আমাকে শারীরিকভাবে নির্যাতন করে।
তিনি জানান. ওসি (সেলিম রেজা) বিয়ে করুক, না হয় মেরে ফেলুক। ওর বাড়ি থেকে কোথাও যাবো না। এর আগে বিয়ের দাবিতে থানায় অনশনের কথা জানিয়ে তিনি জানান, গত ২২ ফেব্রুয়ারি ভোলাহাট থানায় গেলে ওসি নিজে এবং থানার কনস্টেবল ও ড্রাইভার দিয়ে আমাকে বেধড়ক মারধর করেন। আমাকে প্রাণে মেরে ফেলার হুমকি ও মিথ্যা মামলায় ফাঁসিয়ে দেওয়ার হুমকি দেন। বিয়ের দাবিতে অনশন করলে ৫৪ ধারায় পুলিশের কাজে বাধাদানের অভিযোগে গ্রেফতার করে আদালতে পাঠায়। সাতদিন কারাগারে থাকার পর ফিরে এসে জব্দ হওয়া মোবাইল থানা থেকে ফেরত নিয়ে আসি। থানা থেকে মোবাইল এনে দেখি, ওসি আমাদের কথোপকথনের অডিও-ভিডিও সব মুছে দিয়েছেন। আমাদের সম্পর্কের কথা অস্বীকার করছেন।
অভিযুক্ত সেলিম রেজা চৌধুরীর বড় ভাই আব্দুল হাই চৌধুরী বলেন, আমার ভাই (সেলিম রেজা) এ বাড়িতে থাকে না। এ মেয়েটা আমার ভাইয়ের জীবন শেষ করে দিয়েছে। ওর অভিযোগের কারণে ভাই ওসি পদ থেকে সাময়িক বরখাস্ত হয়ে আছে।
এ বিষয়ে সেলিম রেজার স্ত্রী ইয়াসমিন পপি বলেন, আমার স্বামী বিয়ে করবে না। এ জন্য যা হয় হোক।
তাড়াশ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শহিদুল ইসলাম বলেন, এক নারীর অনশনের বিষয়টি আমি ৯৯৯ নম্বরের মাধ্যমে জানার পর ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠিয়েছি।
ঘটনাস্থলে থাকা তাড়াশ থানার সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) বদিউজ্জামান বলেন, ওই নারী বিয়ের দাবিতে সেলিম স্যারের বাসায় এসেছেন। তিনি ওই বাড়ি থেকে যেতে চাচ্ছেন না।
এ প্রসঙ্গে নওগাঁ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান (মজনু) বলেন, শুনেছি একজন মেয়ে নাকি বিয়ের দাবিতে চৌধুরী বাড়িতে এসেছে। তবে একজন ওসি হিসেবে কর্মস্থলে থাকা অবস্থায় নারী সংক্রান্ত বিষয়ে জরিয়ে পড়া সত্যিই দুঃখজনক।
সিরাজগঞ্জ পুলিশ সুপার আরিফুর রহমান মণ্ডল বলেন, বিষয়টি আমার জানা নেই, তবে খোঁজ নিয়ে দেখছি।।